কাজী নজরুল ইসলাম

বিশ শতকে ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হয়ে বিপ্লবী ও বিদ্রোহী মনোভাবের পরিচয়ে নিজেকে বলিষ্ঠভাবে প্রকাশ করেছেন কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর যেসব সৃষ্টি আজ সাহিত্য শিল্প হিসেবে পরিচিত, তা ছিল যোগান্তকারী বজ্রধ্বনি এবং নানা মুখী সমস্যা ও প্রতিকূলতার বিরোদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ। সংগ্রামের সূচনা করেই তিনি ক্ষান্ত নন, বরং সর্বদাই ছিলেন একজন অপটিমিস্টিক কবি, যিনি একটা নিরাপদ ও স্বাধীন জাতিকে দেখতে চেয়েছেন।  বিদ্রোহাত্মক রূপের পাশাপাশি তিনি প্রেমেরও কবি। তিনি  একাধারে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, গান ও অসংখ্য গজল
রচনা করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষিত না হয়েও তিনি জ্ঞানের সুউচ্চ চূড়ায় পদার্পন করেন এবং দার্শনিক মনোভাব নিয়ে মানুষের মনের সকল আবেগ-অনুভূতিকে প্রকাশ করেছেন তাঁর যাদুকরী লেখনির ছোঁয়ায়। অত্যন্ত প্রতিভাশীল ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাঁর সকল  ‍সৃযন কর্মে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একদিকে যেমন ছিলেন রোমান্টিক মননে গড়া অন্যদিকে ছিলেন সামাজিক, রাজনৈতিক সকল অন্যায় ও অত্যাচারের বিরোদ্ধে সোচ্চার। আর সেজন্যে তাঁকে বেশকয়েকবার কারা বরণ করতে হয়। কিন্তু সাহসী কবি কোন বাধাকেই তোয়াক্কা করেন নি।






কাজী নজরুল ইসলামের জনপ্রিয় সকল কবিতাঃ



সর্বহারা

    
কাজী নজরুল ইসলাম


ব্যথার সাতার-পানি-ঘেরা
      চোরাবালির চর,
    ওরে পাগল! কে বেঁধেছিস
      সেই চরে তোর ঘর?
     শূন্যে তড়িৎ দেয় ইশারা,
     হাট তুলে দে সর্বহারা,
     মেঘ-জননীর অশ্র”ধারা
      ঝ’রছে মাথার’ পর,
    দাঁড়িয়ে দূরে ডাকছে মাটি
      দুলিয়ে তর”-কর।।
    কন্যারা তোর বন্যাধারায়
      কাঁদছে উতরোল,
    ডাক দিয়েছে তাদের আজি
      সাগর-মায়ের কোল।
    নায়ের মাঝি! নায়ের মাঝি!
    পাল তু’লে তুই দে রে আজি
    তুরঙ্গ ঐ তুফান-তাজী
      তরঙ্গে খায় দোল।
    নায়ের মাঝি! আর কেন ভাই?
      মায়ার নোঙর তোল্।
    
    ভাঙন-ভরা ভাঙনে তোর
      যায় রে বেলা যায়।
    মাঝি রে! দেখ্ কুরঙ্গী তোর
      কূলের পানে চায়।
     যায় চ’লে ঐ সাথের সাথী
     ঘনায় গহন শাঙন-রাতি
     মাদুর-ভরা কাঁদন পাতি’
      ঘুমুস্ নে আর, হায়!
     ঐ কাঁদনের বাঁধন ছেঁড়া
      এতই কি রে দায়?
    হীরা-মানিক চাসনি ক’ তুই,
      চাস্‌নি ত সাত ক্রোর,
    একটি ক্ষুদ্র মৃৎপাত্র-
      ভরা অভাব তোর,
     চাইলি রে ঘুম শ্রানি–হরা
     একটি ছিন্ন মাদুর-ভরা,
     একটি প্রদীপ-আলো-করা
      একটু-কুটীর-দোর।
    আস্ল মৃত্যু আস্ল জরা,
      আস্ল সিঁদেল-চোর।
    
    মাঝি রে তোর নাও ভাসিয়ে
      মাটির বুকে চল্!
    শক্তমাটির ঘায়ে হউক
      রক্ত পদতল।
     প্রলয়-পথিক চ’ল্‌বি ফিরি
     দ’লবি পাহাড়-কানন-গিরি!
     হাঁকছে বাদল, ঘিরি’ ঘিরি’
      নাচছে সিন্ধুজল।
    চল্ রে জলের যাত্রী এবার
      মাটির বুকে চল্ ।।





অ-নামিকা


তোমারে বন্দনা করি 
স্বপ্ন-সহচরী 
লো আমার অনাগত প্রিয়া, 
আমার পাওয়ার বুকে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া! 
তোমারে বন্দনা করি…. 
হে আমার মানস-রঙ্গিণী, 
অনন্ত-যৌবনা বালা, চিরন্তন বাসনা-সঙ্গিনী! 

তোমারে বন্দনা করি…. 
নাম-নাহি-জানা ওগো আজো-নাহি-আসা! 
আমার বন্দনা লহ, লহ ভালবাসা…. 
গোপণ-চারিণী মোর, লো চির-প্রেয়সী! 
সৃষ্টি-দিন হ’তে কাঁদ’ বাসনার অন্তরালে বসি’- 
ধরা নাহি দিলে দেহে। 

তোমার কল্যাণ-দীপ জ্বলিলে না 
দীপ-নেভা বেড়া-দেওয়া গেহে। 
অসীমা! এলে না তুমি সীমারেখা-পারে! 
স্বপনে পাইয়া তোমা’ স্বপনে হারাই বারে বারে 
অরুপা লো! রহি হ’য়ে এলে মনে, 
সতী হ’য়ে এলে না ক’ ঘরে। 

প্রিয় হ’য়ে এলে প্রেমে, 
বধূ হয়ে এলে না অধরে! 
দ্রাক্ষা-বুকে রহিলে গোপনে তুমি শিরীন্ শরাব, 
পেয়ালায় নাহি এলে!- 
‘উতারো নেকার’- 
হাঁকে মোর দুরন্ত কামনা! 
সুদুরিকা! দূরে থাক’-ভালোবাসা-নিকটে এসো না। 

তুমি নহ নিভে যাওয়া আলো, নহ শিখা। 
তুমি মরীচিকা, 
তুমি জ্যোতি।- 
জন্ম-জন্মান্তর ধরি’ লোকে-লোকান্তরে তোমা’ করেছি আরতি, 
বারে বারে একই জন্মে শতবার করি! 
যেখানে দেখেছি রূপ,-করেছি বন্দনা প্রিয়া তোমারেই স্মরি’। 

রূপে রূপে, অপরূপা, খুঁজেছি তোমায়, 
পবনের যবনিকা যত তুলি তত বেড়ে যায়! 
বিরহের কান্না-ধোওয়া তৃপ্ত হিয়া ভরি’ 
বারে বারে উদিয়াছ ইন্দ্রধনুসমা, 
হাওয়া-পরী 
প্রিয় মনোরমা! 

ধরিতে গিয়োছি-তুমি মিলায়েছ দূর দিগ্বলয়ে 
ব্যথা-দেওয়া রাণী মোর, এলে না ক’ কথা কওয়া হ’য়ে। 
চির-দূরে থাকা ওগো চির-নাহি-আসা! 
তোমারে দেহের তীরে পাবার দুরাশা 
গ্রহ হ’তে গ্রহান্তরে ল’য়ে যায় মোরে! 
বাসনার বিপুল আগ্রহে- 
জন্ম লভি লোকে-লোকান্তরে! 

উদ্বেলিত বুকে মোর অতৃপ্ত যৌবন-ক্ষুধা 
উদগ্র কামনা, 
জন্ম তাই লভি বারে বারে, 
না-পাওয়ার করি আরাধনা!…. 
যা-কিছু সুন্দর হেরি’ ক’রেছি চুম্বন, 
যা-কিছু চুম্বন দিয়া ক’রেছি সুন্দর- 
সে-সবার মাঝে যেন তব হরষণ 
অনুভব করিয়াছি!-ছুঁয়েছি অধর 
তিলোত্তমা, তিলে তিলে! 
তোমারে যে করেছি চুম্বন 
প্রতি তরুণীর ঠোঁটে 
প্রকাশ গোপন। 

যে কেহ প্রিয়ারে তার চুম্বিয়াছে ঘুম-ভাঙা রাতে, 
রাত্রি-জাগা তন্দ্রা-লাগা ঘুম-পাওয়া প্রাতে, 
সকলের সাথে আমি চুমিয়াছি তোমা’ 
সকলের ঠোঁটে যেন, হে নিখিল-প্রিয়া প্রিয়তমা! 
তরু, লতা, পশু, পাখী, সকলের কামনার সাথে 
আমার কামনা জাগে,-আমি রমি বিশ্ব-কামনাতে! 
বঞ্চিত যাহারা প্রেমে, ভুঞ্জে যারা রতি- 
সকলের মাঝে আমি-সকলের প্রেমে মোর গতি! 
যে-দিন স্রষ্টার বুকে জেগেছিল আদি সৃষ্টি-কাম, 
সেই দিন স্রষ্টা সাথে তুমি এলে, আমি আসিলাম। 

আমি কাম, তুমি হ’লে রতি, 
তরুণ-তরুণী বুকে নিত্য তাই আমাদের অপরূপ গতি! 
কী যে তুমি, কী যে নহ, কত ভাবি-কত দিকে চাই! 
নামে নামে, অ-নামিকা, তোমারে কি খুঁজিনু বৃথাই? 
বৃথাই বাসিনু ভালো? বৃথা সবে ভালোবাসে মোরে? 
তুমি ভেবে যারে বুকে চেপে ধরি সে-ই যায় স’রে। 
কেন হেন হয়, হায়, কেন লয় মনে- 
যারে ভালো বাসিলাম, তারো চেয়ে ভালো কেহ 
বাসিছে গোপনে। 

সে বুঝি সুন্দরতর-আরো আরো মধু! 
আমারি বধূর বুকে হাসো তুমি হ’য়ে নববধূ। 
বুকে যারে পাই, হায়, 
তারি বুকে তাহারি শয্যায় 
নাহি-পাওয়া হ’য়ে তুমি কাঁদ একাকিনী, 
ওগো মোর প্রিয়ার সতিনী।…. 
বারে বারে পাইলাম-বারে বারে মন যেন কহে- 
নহে, এ সে নহে! 

কুহেলিকা! কোথা তুমি? দেখা পাব কবে? 
জন্মেছিলে জন্মিয়াছ কিম্বা জন্ম লবে? 
কথা কও, কও কথা প্রিয়া, 
হে আমার যুগে-যুগে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া! 
কহিবে না কথা তুমি! আজ মনে হয়, 
প্রেম সত্য চিরন্তন, প্রেমের পাত্র সে বুঝি চিরন্তন নয়। 
জন্ম যার কামনার বীজে 
কামনারই মাঝে সে যে বেড়ে যায় কল্পতরু নিজে। 
দিকে দিকে শাখা তার করে অভিযান, 
ও যেন শুষিয়া নেবে আকাশের যত বায়ু প্রাণ। 

আকাশ ঢেকেছে তার পাখা 
কামনার সবুজ বলাকা! 
প্রেম সত্য, প্রেম-পাত্র বহু-আগণন, 
তাই-চাই, বুকে পাই, তবু কেন কেঁদে ওঠে মন। 
মদ সত্য, পাত্র সত্য নয়! 
যে-পাত্রে ঢালিয়া খাও সেই নেশা হয়! 
চির-সহচরী! 
এতদিনে পরিচয় পেনু, মরি মরি! 
আমারি প্রেমের মাঝে রয়েছ গোপন, 
বৃথা আমি খুঁজে মরি’ জন্মে জন্মে করিনু রোদন। 

প্রতি রূপে, অপরূপা, ডাক তুমি, 
চিনেছি তোমায়, 
যাহারে বাসিব ভালো-সে-ই তুমি, 
ধরা দেবে তায়! 
প্রেম এক, প্রেমিকা সে বহু, 
বহু পাত্রে ঢেলে পি’ব সেই প্রেম- 
সে শরাব লোহু। 
তোমারে করিব পান, অ-নামিকা, শত কামনায়, 
ভৃঙ্গারে, গোলাসে কভু, কভু পেয়ালায়!




বিদ্রোহী


বল বীর -
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি আমারি, নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর -
বল মহা বিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলোক ভেদিয়া,
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির বিস্ময় আমি বিশ্ব বিধাত্রীর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর-
আমি চির উন্নত শির।
আমি চিরদুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস,
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর!
আমি দুর্বার,
আমি ভেঙ্গে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধুর্জ্জটী, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর!
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সূত বিশ্ব-বিধাত্রীর!
বল বীর-
চির-উন্নত মম শির!
আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণী, তন্বী-নয়নে বহ্নি,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
আমি উন্মন মন উদাসীর,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দণ শ্বাস, হা-হুতাশ আমি হুতাশীর!
আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির-গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম-বেদনা, বিষ-জ্বালা, প্রিয়-লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের!
আমি অভিমানী চির-ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,
চিত- চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম পরশ কুমারীর!
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল ক’রে দেখা অনুখণ,
আমি চপল মেয়ের ভালবাসা, তা’র কাঁকন চুড়ির কন্ কন্।
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচর কাঁচলি নিচোর!
আমি উত্তর-বায়ু, মলয়-অনিল, উদাস পূরবী হাওয়া,
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেনু-বীণে গান গাওয়া।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি,
আমি মরু-নির্ঝর ঝর-ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি।
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি এ কি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুম্-ঘুম্,
ঘুম্ চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝ্ঝুম্
মম বাঁশরীর তানে পাশরি
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠে’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!
আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরণীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল-ধ্বংস-ধন্যা-
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ঞু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
আমি অন্যায়, আমি উল্কা, আমি শনি,
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কলা-ফণী!
আমি ছিন্নমন্তা চণ্ডী, আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!
আমি মৃন্ময়, আমি চিন্ময়,
আমি অজয় অমর অক্ষয়, আমি অব্যয়!
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মথিয়া ফিরি এ স্বর্গ পাতাল-মর্ত্য!
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধা!!-
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার,
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে,
আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে,
মহা- বিদ্রোহী রণ-কাল্ত,
আমি সেইদিন সব শান্ত,
যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দণ-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না
অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত।
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন;
আমি স্রষ্টা-সুদন; শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন।
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
আমি খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন।
আমি চির-বিদ্রোহী-বীর-
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির!

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment