Saturday, April 21, 2018

অপরাহ্নের মৃদুছায়া

 অপরাহ্নের মৃদুছায়া 

    মোঃ অলিউল্লাহ্   
আজি নির্বিঘ্নে, উদাসচিত্তে ছায়াতরুতলে
অতলস্পর্শ উদ্বেগ জাগে জানিনা কোন ছলে
সেই মনঃকল্পিতার অবর্তমান কল্পনা,
মম প্রাণমাঝে সদাই বাজে, অসহ্য যন্ত্রণা

আজি নির্বিঘ্নে, উদাসচিত্তে ছায়াতরুতলে
অতলস্পর্শ উদ্বেগ জাগে জানিনা কোন ছলে
সেই মনঃকল্পিতার অবর্তমান কল্পনা,
মম প্রাণমাঝে সদাই বাজে, অসহ্য যন্ত্রণা
দেখা যদি নাইবা হবে, অন্ধ স্বপ্ন কেন তবে,
ভেবেছি যবে বদনখানি, তখনি মরেছি ভবে

সে যে নিখিল আলোয়, আর অসীম গগন মাঝে
নিগূঢ় বন্ধনে সপেছি মন: ভাবি তাই দিবা-সাঁঝে
শ্যামল অরণ্যে অপরাহ্নে মৃদুছায়াখানি,
কুসুমের ন্যায় ঝড়েপড়ে যেন তব মন্ত্রবাণী
বিজন নিশিতে, তব পদধ্বনি-শুনে হই অস্থির
দিশেহারা হয়ে খুঁজেফিরি, নাহি মিলে তব নীড়

তোমা রচে আজ রজনী কাটে, নিদ্রাহীন এই আঁখি,
তোমা তরে গো, ধূসর স্বপ্ন, ব্যথারা যায় ডাকি
নীলাকাশে নেই শশীর দর্শন, আমি শূন্য ঘরে-
মন শুধু বিরহ-কাতর, বিরোপত্ব অন্তরে
ক্ষণে ভাবি-কল্পনায় তুমি মৃদুসুরে মোরে ডাকো,
ফের বুঝি এসে-কোমল হস্ত আমার কাঁধে রাখো

অবিষণ্ণ মনে ভাবি হয়তো ,আমি নই আর একা-
পিছন ফিরি বিস্মিত হই না পাই তব দেখা
অবেনীসংবদ্ধ কেশগুচ্ছ আঁখিতে আজি ভাসে,
মনঃকল্পিত প্রেয়সী কেন, ফিরে নাহি তবু আসে
মোহগ্রস্ত-ছায়াশূন্য পথপানে চেয়ে হেথায়,
কখন যেন অতন্দ্র আঁখি, হারায়েছে নিদ্রায়

সমস্তটাই হলো না অলীক, স্বপ্নে এলো ফিরে
নিস্তব্ধ বিস্মিত চোখে, দেখি তারে ধীরে ধীরে
বহুকাল ধরে মম অন্তরে কী হলো বুঝিনা,
প্রতীক্ষিত সেই আশাগুলো, নেই আর কল্পনা
খুব সহজে আসলো কাছে, নিজের করলো মোরে
দৃঢ়পণ করে কহিল; ‘আর যাব না ফেলে দূরে’।

মম ধরনী হলো, সুখে পরিপূর্ণ তাহার দর্শনে,
শত বছরের স্বপ্ন আমার পূর্ণ হলো এক্ষণে
এক নিমিষেই জড়িয়ে গেলাম গভীর বন্ধনে,
নিভৃতের সেই প্রণয়াকর্ষণ জাগিল সঙ্গোপনে
তাহার সনে এমনি করে কাটলো সারাবেলা-
অসামান্য ছিল প্রীতি মোদের নিত্যপথ চলা

রজনী শেষে প্রভাত বেলায় মৃদুস্পর্শ গালে,
ভাবি তখনি, আমি জানিআমার ঘুমের ছলে,
এমনি করে প্রতিদিন ভোরে মোর পানে ফিরে চায়,
জোড়া চঞ্চুতে চুম দিয়ে সে, আমার ঘুম ভাঙায়
তন্দ্রা শেষে ওঠি বসে, তার কোমল পরশ পেয়ে,
অপলক চোখে, অমলিন হাসিতে মোরে দেখতো চেয়ে

বাকশূন্য মুখটিতে তার, হাসি থাকত লেগে,
যেই হাসিতে সারা বিশ্বের মানুষ ওঠবে জেগে
নিস্তব্ধ করুণনেত্রে,অপরুপি-নিরোপমা সে-
অরণ্য মাঝে সোনালি শোভা, রাতে শশী নীলাকাশে
যুগে যুগে যারে খুঁজে স্বকাতরে, সেই নিরোপমা
যার চরণে সপিছে নরপ্রাণ -সৌন্দর্য প্রতিমা

নরজীবনের অক্ষমতায়- ভয়শূন্যতা যে-
তাহার পরশে বীর-যুদ্ধা ওঠেছে যে গরজে
সেই মানবীর সংস্পর্শে সবকিছু খুঁজে পাই,
জাগ্রত হয়েও অজ্ঞানে আমি-তার তরে হারাই
সে কী যে সুধাস্পর্ধী তা কেবলি বিধাতাই জানে,
যবে থেকে তারে বুকে টেনেছিনু, বুঝেছি তার মানে

সুপ্ত তারি যুবাবস্থায় রক্তকমল ফোটে
জগতের যত জ্ঞানী-গুণী, তাহার তরেই জোটে
মম প্রাণের হৃৎপিণ্ড আর তুমি রক্তপদ্ম,
কথা শুনে লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যেত সদ্য
বিড়বিড় করে কিযে বকিত- হেসে করিত প্রস্থান,
আমিও তখনি পিছনে পিছনে বুকে গিয়ে জড়াতাম

সদাই আমার সুখের রাজ্যে ঘুচাত দুঃখনিশা
তৃপ্ততায় ভরিয়ে দিত, আমার সকল তৃষা
সেথায় নাহি ছিল মম লাবন্যের পরিসীমা,
সহসা আবার বিলীন হয়ে গেল, সোনার প্রতিমা

 মন:কল্পিত মোর প্রণয়ী যে, স্বপ্নে এসেছিল
কিছুকাল বড় প্রীতি বাড়ায়ে স্বপ্নেই হারালো
সেই যে গেল-আর নাসিল, আর না বাসিল ভালো
দেখিতে দেখিতে তার পথপানে ফুরালো চোখের আলো
সন্ধালোকের যাত্রায় সন্দীপ্ত প্রাণে বিলীন,
জীবন স্বপ্নের মর্মপথে ভালোবাসা অমলিন

কবিতাটি প্রথম প্রকাশ হয়েছিলবাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম ।  উক্ত লিংকটিতে কবিতাটি  বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে

প্রকাশের সময়ঃ বাংলাদেশ সময় : ১৩:২৫ ঘণ্টা, ১৩ এপ্রিল ২০১৩

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment