Showing posts with label মনস্তাত্ত্বিক আলোচনা. Show all posts
Showing posts with label মনস্তাত্ত্বিক আলোচনা. Show all posts

Sunday, May 18, 2025

যে চিন্তায় দিশেহারা মানুষ

 যে চিন্তায় দিশেহারা মানুষ

                                                                                   মোঃ অলিউল্লাহ

সমস্ত পৃথিবীর মানুষের ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রে অবস্থান যে বিষয়টির, তা হলো টাকা ও সম্পদ। শৈশব ও কৈশোর পেরোলেই যেন প্রতিটা মানুষের জীবনে তৈরি হয় স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার আকাঙ্খা। আর জীবনে সুন্দরভাবে বাঁচতে গেলে অর্থ বা সম্পদের বিকল্প নেই। মানব জাতি ছাড়াও পৃথিবীর সকল প্রাণীরই বেঁচে থাকতে হলে খাদ্যের প্রয়োজন পড়ে সবার আগে। সর্ব শক্তিমান আল্লাহ তা’য়ালা প্রতিটা প্রাণীর জন্যই রিযিকের ফায়সালা করে রেখেছেন। সকল প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক যে উপাদনা গুলো তার মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্য, বাসস্থান ও জৈবিক চাহিদা। 

যেহেতু আল্লাহ তা’য়ালার বিশেষ ও শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে মানব জাতি, তাই মানুষের জন্য রয়েছে কিছু বাড়তি উপাদান। যেমন:- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বিনোদন। তবে প্রকৃতির সকল প্রাণীর সাথে মানুষের জীবনের সামঞ্জস্যতার বিবেচনায়, একটি মানুষের জীবনে যে আহা মরি কোন পার্থক্য নেই তা উপলোব্ধির সময় ও সুযোগ মানুষের হয় না। যদি কোন মানুষ চিন্তা করে একটি পাখিকে নিয়ে, পাখিটির বাঁচার জন্য দরকার খাবার, আর সেই খাবারের আহরণ করে ও সামান্য পরিশ্রম করে পাখি তার খাবার জোগায়। দয়াময় আল্লাহ তার  পাখির সেই সামান্য চেষ্টা ও শ্রমের উসিলায় তাকে রিযিক দান করেন। তেমনি পৃথিবীর প্রতিটা প্রাণীর আহারের ব্যবস্থা করেন মহান রাব্বুল আলামিন।

 

 মানুষের জীবনের সঠিক উদ্দেশ্য কি, তা বোধগম্য হয়ে ওঠে না মরার আগ পর্যন্ত বহু মানুষের। কেউ কেউ জীবনকে অনুসন্ধান করেন বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি কিছু মানুষকে সঠিক পথে হয়তো নিয়ে যায়। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষকে নিয়ে যায় ভ্রান্তির পথে, গোমরাহির পথে।


সম্পূর্ণ পড়ুন...

Sunday, June 12, 2022

সব মানুষই পাগল

 সব মানুষই পাগল

মোঃ অলিউল্লাহ্


প্রকৃতির প্রতিটা উপাদানেরই নির্দিষ্ট সীমারেখা বা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর প্রকৃতির  এই নির্দিষ্ট সীমা যখন অতিক্রম করা হয়, তখনই ঘটে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। কৃত্রিমতা বা আর্টিফিশিয়ালিটি সব সময়ই প্রাকৃতিক উপাদানের উপর একটা অতিরিক্ত প্রলেপন। যেমন- মহান আল্লাহ কোন মানুষকে নির্দিষ্ট আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন, অথচ একজনের মনে হলো আমার চেহেরায় মেকআপ করলে আমাকে আরও আকর্ষণীয় দেখাবে। আর তাই সে নিজেকে সব সময়ই কৃত্রিম সাজসজ্জার মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে রাখতে চায়, কিন্তু নির্দিষ্ট একটা বয়সে কিন্তু ঠিকই তার এই আর্টিফিশিয়ালিটি আর কাজে আসেনা, তার চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে; এমনকি কখনো কখনো সেই কৃত্রিমতার জন্য তার স্বাস্থ্যহানি বা ক্ষতিও হয়ে থাকে। 


প্রকৃতি সর্বদাই নির্দিষ্ট রূপে ভারসাম্য বজায় থাকে, কিন্তু যখনই প্রকৃতিতে জোর করে কৃত্রিমতাকে চাপানোর চেষ্টা করা হয় তখন প্রকৃতি তার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া দেখায়। সেটা কিছু আগে অথবা পরে। 


পৃথিবীতে মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার যে বিধান রয়েছে, সেই আইন বা বিধান মেনে চললে কোন মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেনা। কোন জীবন ব্যবস্থায় যতক্ষণ সুশৃঙ্খল ও আইন মানার প্রবণতা থাকে, সে জীবন ব্যবস্থা সবদিক থেকে ভারসাম্য বজায় থাকে।


এবার আসি আসল কথায়, আসলে আমার এই ভাবনা অনেকের কাছে অতি তুচ্ছ মনে হতে পারে। অনেকে ভাবতে পারেন এসব পাগলের প্রলাপ, অথচ আমি সেসব মানুষের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি বা পাগলামি নিয়েই কথা বলছি।


দেখুন, একজন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে যতক্ষণ সে তার সুনির্দিষ্ট প্রয়োজন পূরণে ঠিক যতটা তার দরকার ততটাই সে পায়।  অর্থাৎ প্রকৃত অর্থে কোন মানুষের যতটুকু যা প্রয়োজন, ততটুকু পেলেই তার যথেষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যখন এর কম অথবা বেশি হয় তখনই বিপর্যয় ঘটে। ধরা যাক, একজনের পেটে ক্ষুধা লেগেছে, তার পেট ভরার জন্য যতটুকু খাবার দরকার ঠিক ততটাই তার জন্য যথেষ্ট। এর কম হলে পেট ভরবেনা অস্বস্তি লাগবে, আবার যদি পরিমাণের চেয়ে বেশি খায় তখন বদহজম হবে, আর তাতেও তার অস্বস্তি লাগবে। ঠিক তেমনি জীবন ধারনের জন্য মানুষের যা কিছু প্রয়োজন, ঠিক তা থাকলেই সুন্দরভাবে জীবন কেটে যাবে। এর কম-বেশি হলেই জীবনে ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়। 


মানুষের মৌল মানবিক চাহিদার মধ্যে আবশ্যিক বিষয়গুলোর বাইরে যা আছে তা-ই কৃত্রিমতা। অর্থাৎ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এইসব চাহিদা একটা মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অতি প্রয়োজন। আরোও স্পষ্ট করে যদি মৌলিক চাহিদার কথা বলি তাহলো ক্ষুধা, নিদ্রা, মৈথুন। এগুলোর মধ্যে কোনটির অভাব হলেই জীবনযাপনে বাধাগ্রস্থ হবে। আবার এসব চাহিদার পরেও যাদের আরো অনেক চাহিদা তৈরি হয় তা নেহাত বিলাসিতার শামিল। এর মানে হলো এই যে, কেউ খাবার খেতে বসল, আর তার সামনে বিশ-ত্রিশটি আইটেমের খাবার পরিবেশন করা হলো। হয় সে সবগুলো থেকে একটু একটু করে টেস্ট করবে, না হয় দু'য়েকটা আইটেম দিয়েই খেয়ে উঠবে। এখানে মুদ্দা কথা হলো একজন ব্যক্তির খাবারের জন্য ঠিক যতটুকু খাবার দরকার ততটুকুই পরিবেশন করাটা স্বাভাবিক, এর বেশি করাটা অস্বাভাবিক বা বিলাসিতা। আর একটা সহজ ব্যাপার হলো অপচয়ের পরিণতি অভাব। এই কথার অর্থ হলো যদি একজনের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হয়, তাহলে অচিরেই সে অভাবগ্রস্থ হবে। যা কিনা তার জীবন যাপনের জন্য একটি বিপর্যয় বা প্রতিবন্ধকতা। 


প্রাকৃতিকভাবে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু দরকার, তার বাইরে যে সকল বিষয়ের প্রয়োজন পড়ে তা হলো, চিত্তবিনোদন, সামাজিক পদমর্যাদা, ব্যক্তিত্ববোধ ও নিজেকে মানুষের চোখে শ্রেষ্ঠ করে তোলার একটা আপ্রাণ চেষ্টা। সেটা হতে পারে ক্ষমতার মাধ্যমে বা নিজের অবস্থান দ্বারা মানুষকে আকৃষ্ট করে লোকের চোখে নিজেকে জনপ্রিয় ভাবার মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি। এই যে একধরনের চাহিদা, এটা খুবই মনস্তাত্ত্বিক ও মানুষের এক ধরনের ইলিউশান বা মোহ। আর এই মোহের কারনে মানুষ যারপরনাই ভূমিকা পালন করতে পারে। এক কথায়, এটা মানুষের একধরনের পাগলামি। ঠিক এই জায়গাটায় এসে সব মানুষই পাগল।


দেখেন, আপনার একান্ত মৌলিক চাহিদাগুলো যখন মিটে যায়, তখন আপনি স্বস্তিতে থাকেন। আর কথায় তো আছেই, সুখে থাকলে ভূতে কিলায়। যখন আপনার গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা মিটানোর পর স্বস্তিতে আছেন, তখন আপনার বিলাসী মন আরোও স্বস্তি বা ভালো থাকতে চাইবে। অর্থাৎ আরও কিভাবে ভালো থাকা যায় সেই চিন্তা আপনাকে অনবরত পোক করতে থাকবে। আর আপনি তখন আরও একটু বেশি ভালো থাকার কথা চিন্তা করে হয়তো অনেক পরিকল্পনা করবেন। এই যেমন- লোকের চোখে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য কোন নেতা হলেন বা নিজের প্রতিভা দেখিয়ে হিরো কিংবা মডেল হলেন; যা আপনাকে একটা বাড়তি আত্মতৃপ্তি দেবে। তখন আপনি আহ্লাদে গদগদ হয়ে বলতেই পারেন, আরেহবাহ আমি তো বিশাল কাজ করে ফেলেছি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটা একধরনের মোহ বা মায়া। মৌলিক চাহিদার বাইরে যে চাহিদাই আসে তা আপনার মধ্যে মোহ তৈরি করে। 


এই দুনিয়ায় একেকজন মানুষ একেকটা জিনিসের প্রতি পাগল। কেউ পাগল ক্ষমতার, কেউ ধনসম্পদ বা টাকার পাগল, কেউ কারো প্রেমে পাগল, কেউবা জনপ্রিয় হবার পাগল, কেউ আবার ভাবের পাগল। যাইহোক, আমার এসব কথা বলার উদ্দেশ্য হলো এই পাগলামি বা এইসব চাহিদা কেবল মানুষকে বস্তবাদী ও দুনিয়ামুখী করে তুলে। দুনিয়াতে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কিংবা নিজের অস্তিত্বকে স্থায়ী রূপ দিতে আমরা কত কিছুই না করতে চাই। দুনিয়াকে পর্যাপ্তভাবে ভোগ করার মানসিকতার কারনে আমরা আমাদের আসল পরিচয় ভুলে যাই। মহান সৃষ্টিকর্তা কোন উদ্দেশ্যে আমাদেরকে এই দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তার কথা ভুলে যাই। 


আমাদের এই ভোগবাদী মনোভাবের কারনে আমরা যারপরনাই খারাপ কাজে লিপ্ত হই। এই দুনিয়ায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, ঘোষ খাওয়া, সুদ খাওয়া, হত্যা, নির্যাতন, জুলুম ও অত্যাচার সবই সংগঠিত হয় এই ভোগবাদকে কেন্দ্র করে। যা প্রকৃতির প্রতিকূলে গিয়ে সামাজিক সমস্যা তৈরি করে। অথচ একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য খুব বেশী কিছু দরকার পড়েনা। যদি কেউ ধর্মীয় বিধি বিধান মেনে চলে, তাহলে সে নিশ্চিত ভাবে সেই স্বাভাবিক জীবন ধারার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। একজন মুসলিম হিসাবে আমি ইসলাম ধর্মকে স্বয়ং সম্পূর্ণ মনে করি। আর আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন, নিশ্চয়ই ইসলাম আল্লাহর মনোনীত ধর্ম। 


যেখানে ভোগবাদ মানুষের মধ্যে মোহ তৈরি করে তাকে দুনিয়া মুখী করে তুলে, সেখানে ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মীয় মূল্যবোধ একজন মানুষকে সর্বোচ্চ  নৈতিক হতে সাহায্য করে। তার ভিতর কেবল দুনিয়ার প্রতি লোভ লালসা নয়, যেখানে মৃত্যুর পরে অনন্তকাল থাকতে হবে সেই ভাবনা তার মধ্যে কাজ করে। সে মৃত্যুকে ভয় করে, মৃত্যুর পরের জীবন সম্পর্কে ভয় করে, জান্নাত ও জাহান্নামের কথা স্মরণ করে দুনিয়ায় ভাল কাজ করে। 


যার ভিতর দ্বীনের প্রতি গভীর বিশ্বাস আছে, সে ভোগবাদী না হয়ে বরং দুনিয়াতে কোনভাবে বেঁচে থাকার কথা ভাববে। আর তাই এই বস্তুবাদ মানুষের ক্ষণিকের মোহ বা ইলিউশান ছাড়া কিছুই না। কারন প্রতিটা প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর একজন মানুষ যখন মরে যায়, তখন দুনিয়ায় তার কোন অস্তিত্বই থাকেনা। যদিও বস্তবাদীরা কিছু মৃত মানুষের ইহলৌকিক কৃতকর্মের জন্য তাদের স্মরণীয় বা অমর বলে দাবী করে। আর এটাও তাদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি কিংবা মোহ মায়ার প্রতিফলন ছাড়া কিছুই না। 


কেনো একজন মানুষ মরে গেলে তার কোন অস্তিত্ব থাকেনা? 

কারন ব্যক্তি নিজেই নিজের উপস্থিতি দেখছেনা। যেখানে আমি নেই, সেখানে আমার অস্তিত্ব কি করে থাকতে পারে। যে পৃথিবীতে ভাল থাকার জন্য এতো কিছু করছি, কতদিন আমি এখানে থাকতে পারবো? প্রতিটা মানুষের একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমা বা ভ্যালিডিটি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে, এই ভ্যালিডিটি ফুরিয়ে গেলেই চলে যেতে হবে দুনিয়া ছেড়ে। কোথায় যাবো আমরা মৃত্যুর পর? কী হবে আমাদের সাথে? আর মানুষকে আল্লাহ তায়ালা এতো সুন্দর চিন্তা শক্তি ও বিবেক দেওয়া সত্ত্বেও যখন মানুষ ভ্রান্ত পথে চলতে চলতে পথভোলা হয়ে যায়, তারা পাগল ছাড়া আর কি?  তাদের ভোগবাদ বা বস্তুবাদী মানসিকতা তাদের মধ্যে যে মোহ বা পাগলামির জন্ম দিয়েছে, সেই মোহে তারা অন্ধ। তারা তাদের জ্ঞানের সীমাকে সংকোচিত করে রেখেছে। আর সেজন্যই তাদের এই দুনিয়াপনা বা ভোগবাদ তাদেরকে পাগল হিসাবে সাব্যস্ত করেছে।


শেষ কথা হলো আমার এই লেখার প্রসঙ্গটিকে অনেকে ভুল ব্যাখা করতে পারেন। তারা হয়তো বলতে পারেন, শুধু যদি মৌলমানবিক চাহিদা পূরণ করেই মানুষ খান্ত হয়ে যায়, তাহলে তো মানুষের সৃজনশীলতার প্রকাশ পাবেনা। মানুষ একটা গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যাবে এবং মানুষ যদি কেবল আখিরাত নিয়ে ভাবে তাহলে দুনিয়ায় তো অচলাবস্থা তৈরি হয়ে যাবে। দেখুন, আমি আমার কথাগুলো দ্বারা শুধুমাত্র বুঝাতে চেয়েছি, কেউ যেনো ভোগবাদে এতটাই আসক্ত না হয়, যাতে করে সে আখেরাত বিমুখী হয়ে যায়। দুনিয়ায় সর্বোচ্চ নৈতিকতা ও ভাল কাজের মাধ্যমেই যেনো তার জীবন অতিবাহিত করতে পারে। কেউ যেনো দুনিয়ার মোহে পড়ে অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, জুলুমের মতো অনৈতিক না হয়। পৃথিবীতে কেবল নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যেনো বিনা দ্বিধায় কেউ পাপ না করে ফেলে এটাই বুঝাবার চেষ্টা করেছি।

সম্পূর্ণ পড়ুন...

Saturday, June 11, 2022

জ্ঞান অর্জন বা পড়াশোনা কেনো করবেন?

  • পড়াশোনা করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য।
  • শিক্ষা লাভে বাধা বা অন্তরায়।
  • পড়াশোনার ব্যাপারে বিভিন্ন লোককথা ও সমালোচনা।
  • শিক্ষিত ব্যক্তিদের সামাজিক মূল্যবোধ।

(১ম পর্ব)

জ্ঞান অর্জন বা পড়াশোনা কেনো করবেন?

মোঃ অলিউল্লাহ্

দেখুন আমরা সবাই কমবেশি জানি পড়াশোনা কেনো করবো। কিন্তু জীবনের উদ্দেশ্য বুঝতে না পেরে, অর্থাৎ আমি আসলেই জীবনে কী হতে চাই তা বুঝতে না পারার কারণে শিক্ষা জীবন শুরু হলেও কারো মাধ্যমিক পাশ করেই শিক্ষা জীবন শেষ হয়ে যায়। কারো কারো উচ্চ মাধ্যমিক করেই শেষ  কিংবা ডিগ্রি স্নাতক পযর্ন্ত করা হলেও জীবনের সঠিক লক্ষ্য না বুঝার কারনে শিক্ষার গুরুত্ব হারিয়ে যায়।

আর তাই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের শুরুতেই যা যা করতে হবেঃ


১। শিক্ষা বা জ্ঞানার্জন কী জানতে হবে।
২। কেন শিক্ষা লাভ করবো জানতে হবে।
৩। একটি উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য স্থির করতে হবে।
৪। জীবনকে একটা উন্নত ও অন্যের থেকে আলাদা মান দেবার জন্য জ্ঞানার্জন করতে হবে।
৫। নিজের লক্ষ্য পৌছানোর জন্য বদ্ধপরিকর হতে হবে।
৬। পড়াশোনার পাশাপাশি বাস্তবতাকে জানতে হবে এবং সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি জীবনমুখী কারিগরী শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
৭। শিক্ষাকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করে নিবিড়ভাবে জীবনের প্রয়োজনীতা পূরণ করতে সেই জ্ঞানকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে।
৮। নিজেকে অন্যের সামনে আদর্শবান করতে জ্ঞানার্জন করতে হবে।
৯। পৃথিবীকে জানতে, পৃথিবীর রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস,  বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা জানতে পড়াশোনা করতে হবে।
১০। ধর্মীয় মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সৎ জীবনযাপন করার জন্য জ্ঞানার্জন অতি প্রয়োজন।

সম্পূর্ণ পড়ুন...

Wednesday, October 21, 2020

মুক্তির পথ || মোঃ অলিউল্লাহ

 স্বপ্ন তো প্রায় প্রতিরাতেই দেখি। কিছু স্বপ্ন থাকে যা ভালো লাগার, আর কিছু স্বপ্ন থাকে যা অপ্রত্যাশিত। স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানার আগ্রহ আমার আছে। কিন্তু কে খুব ভালো ব্যাখা দিতে পারে সেটা জানা নাই। কিন্তু আজ শেষরাতের স্বপ্নটা আমায় এতটাই উদাসীন করে তুলল, খুব কৌতুহলী হলাম এবং সিদ্ধান্ত নিলাম কোন বিজ্ঞ আলেমের কাছে গেলে হয়তো উনি আমায় ভাল একটা ব্যাখা দিতে পারবে। সারাদিন অনেক কিছুই ভেবেছি। কিন্তু ব্যাখ্যা যতটুকু নিজে করতে পেরেছি, সেটা নিজের কল্যাণের কথা চিন্তা করে ইতিবাচকভাবেই করেছি। তথাপি একজন আলেমের সাথে দেখা মিলল। সালাম দিয়ে উনার কাছে কিছুটা সময় চাইলাম। কিছুটা কৌতুহল দেখতে পেলাম উনার চোখে-মুখে।

‘কি বলতে চান? একটু সংক্ষেপে বলবেন। আমার কিছু কাজ আছে।’

কিভাবে বলা শুরু করবো ভাবছি। কিন্তু মনে হচ্ছে আমার বলতে একটু বেশি সময় লাগবে। আমি কি অন্য কোন দিন আসবো?

‘কত সময় লাগতে পারে? ত্রিশ মিনিটে হবে?’

হ্যা আশা করছি এর মধ্যে শেষ করতে পারবো। তবে আরো কিছু সময় লেগে গেলে...।

‘আচ্ছা বলুন। কি বলতে চান।’

আমি আসলে আজ শেষ রাতে একটা স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নটা নিয়ে সারাদিন ভেবেছি। নিজের মতো দু’য়েকটা ব্যাখাও দাড় করিয়েছি। কিন্তু এতে আমি তৃপ্ত নই। আমি চাইছি, কেউ একজন আরো ভাল কোন ব্যাখ্যা আমায় দিতে পারবে, সেজন্যেই...।

‘দাড়ান দাড়ান। আপনি ভুল করছেন। আমি আসলে স্বপ্নের এতো ভাল ব্যাখ্যা দেওয়ার জ্ঞান রাখিনা। আপনি বরং অন্য কারো সাথে কথা বলতে পারেন।’

তবে আমার মনে হচ্ছে, কথাগুলো শুনে কিছু একটা আমায় বলবেন, যা থেকে আমি শিক্ষা নিতে পারবো।

‘দেখুন আমারও ইচ্ছে হচ্ছে আপনার কথাগুলো শুনি। কিন্তু আপনার কোন কাজে আসবো কিনা জানিনা। আচ্ছা বলুন, কী দেখেছেন স্বপ্নে।’

আমি দেখলাম আমি একটা অচেনা দেশের অচেনা এক শহরে কাজে কাজ করতে গিয়েছি। যেদিন সেখানে পৌছলাম, সেদিনই সেখানে একটা দূর্যোগ শুরু হলো। আগে শহরের বর্ণনা দিয়ে নেই। শহরটা খুবই ছোট একটা দ্বীপ এর মতো। একতলা বিশিষ্ট কিছু বাড়ি ও কিছু টিনের ঘর দেখতে পাচ্ছিলাম। বাড়ি গুলো একটা অন্যটা থেকে দূরবর্তী ছিলো। কিন্তু প্রত্যেকটা বাড়িই আধুনিক স্টাইলে ডেকোরেট করা, অর্থাৎ দেখে মনে হবে অভিজাত বা রুচিশীল মানুষের শখের বাড়ি। কিন্তু শহরে যে খুব ধনী মানুষ আছে এমন নয়। আমার স্বপ্নটার সাথে দু’য়েকটা কাহিনীর মিল আছে। প্রথমত আমি নূহ (আঃ) জীবনী পড়ে যা জানতে পেরেছি তার সাথে কিছুটা মিল আছে। দ্বিতীয়ত আমাদের দেশের একটি চলচ্চিত্রের একটা অংশের সাথে মিল খোঁজে পাই। কিন্তু যেই ব্যাপারটা জন্য আমি কোন আলেমের কাছে স্বপ্নের ব্যাখা চাইছি সেটা খুব আশ্চর্যজনক।

এবার বলছি কি ঘটছিলো সেখানে। কোথা থেকে যেনো পানির ঢল এসে সবকিছু প্লাবিত করে দিচ্ছিল। চারিদিকে কান্নার রোল পড়ে গেলো। অসংখ্য মানুষের চিৎকার যেনো এক মুহুর্তের মধ্যে পানির সাথে মিলিয়ে গেলো। ঘর-বাড়ি, আসবাবপত্র, গৃহপালিত প্রাণীসহ সবকিছু এক মুহূর্তের মধ্যে পানির নীচে তলিয়ে যাচ্ছিল। অনেক দূরে দেখতে পেলাম মসজিদে যে গালিচা বা প্লাস্টিকের যে জায়নামাজ থাকে, সেগুলো ভেসে ভেসে আসছে। অলৌকিকভাবে কিছু মানুষ সেই গালিচার উপর দাড়িয়ে রয়েছে স্থিরভাবে। কিন্তু তারা ডুবে যাচ্ছে না। তারা সবাই নামাজে দাড়ানোর মতো খুবই শৃংখলভাবে লাইনে দাড়িয়ে আছে। গালিচা গুলো সব ভেসে ভেসে একজায়গায় এসে একত্রিত হলো।

‘তখন আপনি কোথায় ছিলেন?’

দুঃখিত আমি আমার অবস্থানের কথা বলতে ভুলে গিয়েছি। আমি অনেকটা দূরে একটা উচুঁ  টিলার উপর দাড়িয়ে দেখতে লাগলাম। দেখলাম তখনো সেই টিলায়  পানি পৌছায়নি। টিলার চূড়ায় একটা টিনের ঘর রয়েছে। ঘরে অনেক পুরাতন আসবাবপত্র। কৃষ্ণবরে্ণর দুইজন ব্যক্তি বিছানায় শুয়ে আছে। বাহিরে কী হচ্ছে সেসব নিয়ে তাদের মধ্যে কোন উদ্বেগ দেখতে পায়নি। তবে ঘরের ভিতর থেকে বেড়িয়ে এলো আমার দুঃসম্পর্কের এক মামা। উনি আমায় বলল- ‘তুমি এই বিপদের মধ্যে এখানে কেন আসছো? আমরাও বিপদের বাইরে না। যেকোন সময় আমাদের বাড়িও ডুবে যেতে পারে।’


আমি ওনাকে অনেক অনুরোধ করলাম এই ঘরে আমাকে আশ্রয় দিতে। উনি প্রথমে ইতস্তত করছিল, পরে বলল- ‘টাকা পয়সা আছে তোমার কাছে?’

আমি বললাম- টাকা পয়সা যা ছিলো এদেশে আসার পথেই খরচ হয়ে গেছে। কিন্তু আমি আপনাদের ঘরের সকল কাজ করে দেবো। দয়া করে আমাকে থাকতে দেন। উনি রাজি হলো। এরপর যা দেখলাম, তা আরো বেশি লোমহর্ষক। দূরের সেই গালিচায় যারা রয়েছে, সেখানে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ দেখতে পেলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন অনেকগুলো খাবার নিয়ে প্রত্যেকের কাছে যাচ্ছে, আর বলছে ‘যার যার কাছে টাকা আছে দাও এবং খাবার কিনে খাও।’

দূরে হলেও কী করে যেনো আমি তাদের সকল কথা শুনতে পাচ্ছি। একজন লম্বা ব্যক্তি তার শিশু পুত্রকে কুলে নিয়ে কাঁদছে। হয়তো তার স্বজনরা পানিতে তলিয়ে গেছে।

‘আচ্ছা এখানে আপনাকে একটু থামতে বলছি। আর জানতে চাইছি, আপনি গত কয়েকদিনে আর কোন আজব স্বপ্ন দেখেছেন কিনা?’

হ্যা দেখেছি। দুইদিন আগে যে স্বপ্নটা দেখলাম,  সেটা কিছুটা আশ্চর্যজনক ও অনেকটা ছাড়া ছাড়া স্বপ্ন ছিলো। 

‘সেই স্বপ্নটা কি ছিলো? সংক্ষেপে বলেন।’

কিন্তু আপনার তো দেড়ি হয়ে যাবে।

‘আচ্ছা আপনি সময় নিয়ে ভাববেন না। আমার যে কাজটা ছিলো তা পরে করলেও চলবে।’

ঠিক আছে, তাহলে বলছি। সেই স্বপ্নটায় আমি আমার শৈশবের বয়সে ফিরে গিয়েছি। আমার এক বন্ধুকে নিয়ে হিন্দুদের পূজা দেখতে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখলাম। আকাশে ঝলমলে বাজি ফুটতে দেখে খুব আনন্দিত ছিলাম আমরা। সেটা ছিল রাতের বেলা। অনেক রাত পর্যন্ত আমরা সেখানে নাচ-গান, সার্কাস, বিভিন্ন মূর্তি দেখেছি। কিন্তু বাড়ি ফেরার সময় আমরা অন্ধকারে পথ ভুলে যাই। তখন আমরা দুজনেই হাটতে হাটতে অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আর কোনমতেই হাটতে পারছিলাম না। পা ব্যথা হয়ে এসেছিল। ওহ আমার বন্ধু প্রথমে সেখানে যেতে চাইছিলনা। সে বলছিল হিন্দুদের পূজোয় গেলে, তার মা জানতে পারলে তাকে বকা দিবে। কিন্তু আমি তাকে জোর করে নিয়ে যাই। পথ হারাবার পর ধীরে ধীরে সব কিছু খুব ভৌতিক হতে শুরু করে। চারিপাশে নানা প্রকার শব্দ হচ্ছিল। ভূতুরে কিছু দৃশ্যও দেখে খুব ভয় পেলাম।  একটা সময় দুজন  কাঁদতে কাঁদতে একস্থানে বসে পড়লাম। তখনই ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। ফজরের আযান শুনতে পেলাম। তারপর আমি ফজরের নামাজ আদায় করে নেই।

‘আপনি নিয়মিত নামাজ পড়েন?’

চেষ্টা করি। যদিও আগে নিয়মিত ছিলাম না।

‘তারপর কি হলো বলেন।’

আগের স্বপ্নের কথা বলবো? নাকি আজকেরটা?

‘হ্যা আজকে যেটা দেখেছেন, সেটা বলুন।’

তারপর আমি দেখলাম, যারা খাবার নিয়ে যাচ্ছিল তাদের খাবার শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু পরবর্তীতে আর খাবারের কোন জোগান নেই। এটা নিয়ে অবশ্য তাদের কোন অনুতাপ নেই। আমি ঘরে ভিতর গেলাম। দুই/তিন এভাবে কেটে গেল। তারপর বাহিরের আর কোন শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম না। দেখতেও পাচ্ছিলাম না কিছু। সবকিছু অদৃশ্য হয়ে গেলো। এরপরেই শুরু হলো প্রচন্ড বৃষ্টি। আমি যেই ঘরে ছিলাম সেই ঘরের লোকজন প্রথমে খাবার না পেয়ে ছটফট করছিল এরপর অদৃশ্য হয়ে গেলো। আমি বিষণ ভয়ার্ত চোখে দেখতে লাগলাম বৃষ্টির কী তান্ডবলীলা। ধীরে ধীরে ঘরের চাল ফোটা হয়ে পানি পড়তে শুরু করলো। বৃষ্টির পানিতে সারা ঘর ভিজে গেল এবং বাহিরে পানির ঢল ভিতরে আসতে শুরু করল।

ভয়ে আর আর্তনাদে আর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়ার মতো অনুভব করলাম। লাফ দিয়ে ঘুম থেকে ওঠলাম। ঘড়িতে সময় তখন ৫:১০ মিনিট। ফজরের নামাজ আদায় করলাম।

‘আপনি বলছিলেন আপনার স্বপ্নের কিছু ব্যাখ্যা করেছেন। কী ব্যাখ্যা করেছেন সেটা শুনতে চাই।’

না তেমন গুরুত্ববহ কিছু না।

‘তবুও বলুন।’

আমার মনে হয়েছে প্রথম স্বপ্নের সাথে দ্বিতীয় স্বপ্নের যোগসূত্র আছে।

‘কীভাবে?’

প্রথমত পূর্বের স্বপ্নের সময় ও পরবর্তী স্বপ্নের সময় খুব কাছাকাছি। প্রথম স্বপ্নে অতিপ্রাকৃত বিষয়বস্তু ছিলো, তেমনি দ্বিতীয় স্বপ্নেও সুপারন্যাচারাল অনেক কিছু দেখলাম। প্রথম স্বপ্নে আমরা যাচ্ছিলা মূর্তিপূজা দেখতে এবং ফেরার পথে আমরা অনেক ভয় পাই ও বিপদে পড়ি। দ্বিতীয় স্বপ্নেও অনেক বিপদ ও ভয় পেয়েছি। 

‘আপনি বলছিলেন কোন এক বিষয়ের কারনে আপনি স্বাভাবিক কোন স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারীর কাছে না গিয়ে বিজ্ঞ আলেম খোঁজ করছিলেন। সেটা কেন?’

ও হ্যা, সেটা মূলত স্বপ্ন দেখার সময়ের কারণে এবং বেশ কিছুদিন যাবৎ আমি অলৌকিক ধাচের কিছু স্বপ্ন দেখছি। আমি অনেক ভেবে চিন্তে দেখলাম, যেদিন থেকে আমি আমার জীবনের কিছু বাজে অভ্যাস ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে চাইলাম এবং নিজের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন বোধ করলাম, সেদিন থেকেই এই ধরনের স্বপ্ন এমনকি বাস্তবেও অনেক ঘটনা যেগুলো আমার সাথে ঘটছে সেসবের মিল খোঁজে পেলাম। আমি ধরে নিলাম ব্যাপারটা ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। 


হতে পারে এটা আমার জীবনের পরিবর্তনের কারণে হেদায়াতের ইঙ্গিত, যাতে করে আমি জীবন যাপনের সকল ব্যাপারে আরো বেশি সাবধান হতে পারি। জীবনকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও মহৎ উদ্দেশ্য দ্বারা চালিয়ে নিতে পারি। আমার প্রথম  স্বপ্ন আমার জন্য অনেকটা সাইরেনের মতো বোধ করছি, আমি নিজেকে ও নিজের আচরণ এবং দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন করার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও আমার সামনে অনেক বাধা আসবে। আদৌ আমি আমার সরল পথে কতদূর যেতে পারবো সে বিষয়ে আমি সন্ধিহান। আমার পূর্বেকার যাপিত জীবনের অনেক কিছুই অভ্যাসে পরিণত হওয়ায়, সেসব বাহ্যিক ‍দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটতে চায়। আমি সেটাকে আরো প্রবলভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পরবর্তী স্বপ্নকে অভিজ্ঞতা হিসাবে গ্রহণ করতে পারি। এটা কেবল আমার স্বপ্নের ইতিবাচক দিক, যা আমার কল্যাণের উদ্দেশ্যে ভেবেছি।


আরেকটা হলো নেতিবাচক দিক। সেটা নিয়ে আমি খুব ভীতসন্ত্রস্ত। যেহেতু দু’টো স্বপ্নই অতিপ্রাকৃত উপাদান নির্ভর এবং দূর্যোগ কবলিত, তাই আমি জীবনে অনেক বড় বিপদ আশঙ্কা করছি। এমনকি সেই বিপদ থেকে উৎরানোর কোনো সুযোগও না থাকতে পারে। 

‘বুঝলাম। আমি জানি আপনি আমার বলার অপেক্ষায় রয়েছেন যে আমি কী বলবো। আমি আসলে বিশেষ কিছু বলতে পারবো না। কিন্তু আপনার ধারণাগুলোতে কিছুটা সহমত পোষণ করবো। তবে আপনাকে বলবো, যে জীবন থেকে আপনি পরিত্রান পেতে চান, সে জীবন পরিহার করুন। আপনার বিশ্বাসের খুটিটা আরো মজবুত করেন। জীবনের আসল উদ্দেশ্য, দুনিয়া ও আখিরাত, জন্ম-মৃত্যু ও দুনিয়ার সকল সৃষ্টির প্রতি অবলোকন করে সৃষ্টিকর্তার নিদর্শনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করুন। গতানুগতিক বা স্বভাব ধর্ম পালন না করে, কেবল পরকালের কথা হিসাব করে আরো বেশি যত্নবান হয়ে ইবাদত করুন।

মনে রাখবেন, শয়তান প্রতিনিয়ত আপনাকে ধোকা দিতে চাইবে। আপনার নামাজ পড়া, সকল ইবাদত সম্পন্ন করার পরও আপনাকে ইসলামের আদর্শ বহির্ভূত কাজ করার জন্য শয়তান আপনাকে উস্কানি দেবে।’

কী রকম?

‘এই ধরুন আপনি সবই করছেন, কিন্তু মনে মনে ভাবলেন নামাজ তো একটু পরেও পড়া যাবে। সবই তো করছি, দ ‘য়েকটা গান শুনলে বা একটা সিনেমা দেখলে কী এমন পাপ হবে? ইসলামের আদর্শ মতোই তো চলছি, কিন্তু আপনার মনের অজান্তেই কিছু ছোট ছোট মিথ্যে বলছেন, টাকনোর নিচে কাপড় পরিধান করছে। কুরআন ও হাদিসের নিষেধ অমান্য করে খামখেয়ালি জীবন যাপন করছেন। তার মানে আপনি নামাজ রোজা করলেও ধর্মীয় বন্ধনে অটুট নন। আপনার বিশ্বাস এখনো অনেক নড়বড়ে।’

আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু আরোও তাৎপর্যপূর্ণ কিছু বলবেন কী?

‘হ্যা, বলবো। আপনি এখন থেকে সর্বদাই মৃত্যুর কথা স্মরণ করবেন। পরকাল নিয়ে অনেক বেশী ভাববেন। দুনিয়াবী চাহিদার মতো করেই পরকালের চাহিদাকে গুরুত্ব দিন। বেশি বেশি নৈতিক শিক্ষা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে জীবন যাপন করার চেষ্টা করুন। নিজে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাবার চেষ্টা করুন এবং পরিবার পরিজনদের রক্ষা করার চেষ্টা করুন। আমার উপদেশ আপনার কাছে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে। তবে আমার ভাবনায় যতটুকু আসলো আপনাকে বললাম। তবে আপনি আরোও বড় কোন বুজুর্গ ব্যক্তির স্বরণাপন্ন হতে পারেন।’

সম্পূর্ণ পড়ুন...

Friday, May 11, 2018

মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক

মনস্তাত্ত্বিক আলোচনার প্রথম পর্বে আমি আলোচনা করতে চাই মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে। এটি মানব জীবনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রায় প্রতিটি মানুষই জীবনে একটা সময় উপলোব্ধি করে সম্পর্কের ভাঙ্গা-গড়া ও অদল-বদল নিয়ে। তাই আমার এই অডিও ফাইলটি সকলের জন্য প্রকাশ করলাম। আপনারা চাইলে ইউটিউভ গিয়ে আমার এ আলোচনাটি শুনতে ও ডাউনলোড করতে পারেন।

উক্ত লিংকটিতে ভিজিট করার মাধ্যমে আপনি ইউটিউভ থেকে ভিডিওটি দেখতে ও ডাউনলোড করতে পারেন।



সম্পূর্ণ পড়ুন...