স্নেহের স্মৃতি
মোঃ অলিউল্লাহ
দিনান্তের ক্ষণে উর্ধ্ব গগনে অস্ত যাওয়া রবি,
দিব্য আদেশে এসেছি ভবে,হারাবে একদিন সবি।
তবুও গোধূলি দেখতে ভারি বিষন্নতায় ভরা,
যদিও রঙ্গিন সবার আঁখিতে আলোকিত এ ধরা।
রাতদুপুরে হঠাৎ করে চোখে ভাসিল সে আঁখি
বুক ফাটে যার আর্তনাদে-শুধু অশ্রুঝরার বাকি।
হাসির আড়ালে শোকের ছায়ারা করছিল যে তাড়া,
তবুও বুঝেনি বদনখানিরে দু’একজন কে ছাড়া।
হাহাকারে তার প্রাণটি কাঁদে,বাহিরে অন্য রূপ
তাহার এমন ক্ষণটিতে যে আমরা সবাই চুপ।
শ্রেণিকক্ষে সম্মুখে দাঁড়ায়ে কথা বলছেন একা,
আমরা সকলে শিক্ষার্থী আর তিনি শিক্ষিকা।
মাঘের দিনের এই দিনটিতে কঠিন স্মৃতির জালে,
বিষাদে ভাসায়ে বাবা যে তাহার দূরাকাশে গেল চলে।
না ফেরার দেশে পারি জমালো নিজের মতো করে,
বড় অভাগী করিয়া তাহারে রেখে গেল দূরে সরে।
বাবা,বাবা বলে কত না ডাকিত ছোট্ট বয়স থেকে
সেই বাবা আজ তাহারে ছাড়ি কোন আকাশে থাকে?
না জানি তাহার স্মৃতির দেয়ালে কত কিছু আছে লেখা-
দিবস-রজনী কল্পিত চোখে সকলই হয় যে দেখা।
“ক্লান্তিলগ্নে বটতলে আমি, তুমি হয়ে ছিলে ছায়া
ভ্রান্তিকালে শাসনের ছলে তুমি দিয়েছিলে মায়া।
কত না শ্রমে কাঁটায়েছ দিন শুধুই মোদের লাগি
এখন বুঝি গগনে মিশিয়া, দেখ মোরে সদা জাগি।
তুমি তো আছো অনেক ভালো, আমিও মন্দ নই
মাঝে মাঝে তব স্মৃতির চারণে বড়ই ব্যাকুল হই।
মনে পড়ে বাবা,সেই শৈশবে আঙ্গুল ধরিয়া মোর-
আলতো পায়ে হাটিতাম আমি নিয়ে যেতে বহুদূর?
সরু পথ ধরে হেটে চলিতাম বড়ই মজা করে,
পিছনে তুমি অতি চিন্তিত, না জানি আমি যাই পড়ে।
অনতিদূরে ডাকিয়া মোরে তুলিয়া নিতে কোলে,
তবুও দিতে না হাটিতে মোরে একটু হেলেধুলে।
কিঞ্চিত কোন ব্যথায় আমার ,তুমি হতে দিশেহারা
কি করিবে তখন ভেবে না পেতে হয়ে আত্মহারা।
তব সেই দিনের ঐ মেয়েটি আজ আর নইকো তেমন
সুখে-দুঃখে তার দিন চলে যায়,সকলের কাঁটে যেমন।
এখন আর সেই পূর্ণিমা শশী লাগেনা তেমন ভালো,
ব্যস্ততার ঐ বস্তুবাদে সবই কেবলি হারালো।
তথাপি যদি সেই স্বাদ জাগে আমি ছুটে যাই ছাদে
তখনই আবার মনে পরে তোমায় বিষণ আর্তনাদে।
কি ছিল ব্যথা না কহিলে কবু,যদি না কষ্ট পাই
এখন যে মোর পরান মানেনা, কি দিয়া তারে বুঝাই?
সদা রাখিতে বুকেতে জড়ায়ে এমন মাঘের শীতে,
তোমার মেয়ে যে শীতার্ত আজ, এই মহা ধরনীতে।
দেখ কি তুমি নয়ন মেলিয়া,বাড়াও কি ঐ দু’হাত-
যেমন রাখিতে তোমার বাহুতলে নিশি হইতে প্রভাত?
প্রকৃতি আজ বড় স্তব্ধ,নত হয়ে মোর পানে চায়
কারন আমি বলি না কাউকে,শুধু বলি যে তায়।
এরাই আমার শান্ত¡না আজ,এরাই আমার সাথী,
সদাই এদের তরে জানাই মনের সকল মিনতি।
বিধাতার তরে বলি বারে বারে,একটু দেখিবার দাও-
নাইবা যদি দেখাবে হেথায়, সেথায় তুলে নাও।
তবুও আবার মিলিতে পারিব আমার বাবার সনে,
তখনই হয়তো মিটিবে জ্বালা,যা আছে মোর মনে।”
পুনরায় বলে-“বাবা তো গেল,স্মৃতিগুলো কেন না নিলো-
এরা যেন মোরে (কর্ণকিনারে)করুণ সুরে করছে এলোমেলো।”
শান্ত¡না না যে চায় না কারো,বলে শুধু বিধাতারে-
“খোদা তুমি বড়ই মহান, বেস্ত দিও মোর পিতারে।”
তাহার কন্ঠে গলা মিলায়ে মোরাও প্রার্থনা করি,
ফেরেস্তাকুল যেন তাহারে বেহেস্তে নেয় বরণ করি।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment