বাংলা কবিতাঃ তুই ছাড়া আমি বলে কিছু নাই
তুই আমার শান্ত দৃষ্টিকে করছিস অশান্ত,
উদ্যমতা ও উৎফুল্লভাবকে নিমেষেই কেমন করছিস নির্জীব আর ক্লান্ত।
যে চোখে দেখছি দিনের আলো আর রাতের অন্ধকার-
প্রায়শই তুই আমায় ভুলিয়ে দিস, করে দিস আমার সত্য বিশ্বাসকে ভ্রান্ত।
যারা রাতের স্বপ্ন নিয়ে ভাবে না, কাক ডাকা ভোরের কথা ভাবেনা, বসন্ত কিবা শরৎ নিয়েও ভাবে না-
তারাতো তাদের ভাবনা নিয়েও ভাবে না।
তুই আমার মাঝে সৃজন করিস দুনিয়ার সমস্ত চিন্তার,
সেই চিন্তা নিয়েও চিন্তা করতে বাধ্য করিস বারবার।
তোর চাওয়াতে রাত্রি জাগি, মন্দকে ভালো ভাবি আর ভালোকে কবু ভাবি মন্দ
তোর চাওয়াতে রোদেলা দুপুরে বৃষ্টির কল্পনায় ডুবি, বিরহকাতর হয়ে বোধ করি স্বাচ্ছন্দ।
তোর ইশারায় নিজেকে উচ্চ আসনে অর্পন করি,
তাচ্ছিল্যে তোর মূহুর্তেই হই সর্বহারা ও স্বজনহারা, সব চাওয়া যে তোরই।
মুক্ত বাতাসে নিজেকে ভাসিয়ে উড়ে যাই মহাজগতের কিনারে কিনারে,
অতি নগন্য হতে বিশালতম বস্তুটিকেও দেখি তোর মতো করে।
আমি পাপী, আমি অপরাধী, আমি নির্দয়, আমি খামখেয়ালি,
আমি উন্মাদ, আমি উদাসীন, আমি একান্ত সার্থপর হয়ে তোর পথেই চলি।
আমি কখনো কাতর নিজের শোকে, কখনো কাতর পরের লাগি
সারাদিন যায় যেমনি নিজেকে ভেবে, তেমনি আবার পরকে ভেবেও রাত্রি জাগি।
তুই আমায় মুগ্ধ করিস স্বর্গসুধা পান করিয়ে,
পরক্ষণেই যে ব্যস্ত রাখিস ইহলোকের ভাবনায় মিলায়ে।
তুই শিখালি আপন পর আর সুজন দুর্জন
শিখালি তুই বন্ধু কে, আর কে প্রিয়জন।
তুই জাগালি সুপ্ত বাসনা, কামনার তৃষ্ণা আর মোহ মায়া।
উতলা করিয়া তুই কাছে টানতে চাইলি প্রিয়ার কায়া।
ভালবাসা ও স্নেহের সামান্য অভাবেই তুই প্রচন্ড ব্যকুল
নিজের চাওয়াকে পেতে তুই আমায় দিয়ে করাতে পারিস শত ভুল।
কখনো আবার তুই সামান্যতেই দারোণ তৃপ্ত,
কখনো কখনো দুঃসাহসী করে তুলিস আমায়, কখনো আবার ক্ষিপ্ত।
তোর ইচ্ছাতে আমি খেটে যেতে পারি রাত-দিন
কোন কাজেই লাগে না ভালো তোর মর্জি বিহীন।
আমি যে তোর কৃতদাস, আমি যে তোর হাতের নাটাই-
তোর দ্বারা সদাই নিয়ন্ত্রিত আমি, তুই ছাড়া আমি বলে কিছু নাই।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment